রাজবাড়ী ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কে তুমি? বিধান কুমার বিশ্বাস

কে তুমি?
বিধান কুমার বিশ্বাস

কে তুমি, তুমি কে? বল হে;-
আজও পারিলাম না আমি চিনতে তোমারে!
তুমি কী খরস্রতার ন্যায় এ হিল্লোলের প্রমত্তা পদ্মা –
তুমি কী ভাগীরথী না ভৈরব স্বত্বা?
তুমি কী শদ্ব, স্পর্শ, রুপ, রস, গন্ধ
না তুমি আত্মা নিত্য ও শাশ্বত?
তুমি কি বিবেক- বুদ্ধি, রও সদা অচ্যুত
না তুমি পথভ্রষ্ট, হীনমন্যতায় বিচ্যুত!
তুমি কী নুর? না নুরজাহান!
না তুমি স্থল, ধু ধু নীল আসমান।।
তুমি কী মাখলুক না আশরাফুল মাখলুকাত;
না তুমি ছোট-বড়ো, ধনী-গরিবের দিষৎ করাঘাত!
তুমি কী শ্বাস-প্রশ্বাস না নয়নের দৃষ্টি?
না কি তুমি বাক্য, শ্রবনে অনুভূতি সৃষ্টি!
তুমি কি অনুভূতি’তে সৃষ্টিময় সুখ,
না-কি তুমি ব্যথিত হিয়ার সিন্ধু ভরা দুখ!
তুমি কি শিশু, কিশোর, যৌবন;- হও বা বৃদ্ধ,
না কি তুমি ধর বা চিত্তে’র মধ্যে আবদ্ধ ঋদ্ধ।।
তুমি কি জাগ্রত, নিত্য, শাশ্বত প্রেম?
না তুমি বিরহ, বেদনা, যন্ত্রণা’র কাছের টেম!
তুমি কি মণি, ঋষি, সুফি, দরবেশের সংরাধন
না তুমি সকল অন্যায়, অত্যাচারের সংরোধন;
তুমি কি আমার সংবৃতি না সংবিত্তি
না তুমি আমি হতে আমার সংবৃত্তি!
তুমিই বোধদয় মোর সজ্ঞান সংজ্ঞান
না তুমি পঞ্চ-ষষ্ঠ, একাদশ ইন্দ্রিয়ধারি ধর বীক্ষ্যমাণ।।
কে তুমি? তুমি কে! জীবন নামক নদীর বজরা;-
না তুমি পতিত মানবজমিনে অমূল্য আজরা!
তুমি কি জীবন রবি উদয়ের যবনিকা কাটানো কিরণ
না কি তুমি তিমিরে শশী হতে জ্যোতির নিঃসরণ?
তুমি কি সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদের হাহাকার!
না-কী তুমি, প্রসূত মা’র গর্ভ হতে সন্তানের আকার?
তুমি-ই কী পরমাত্মা? এক এবং অদ্বিতীয় –
না তুমিই এই মৃন্ময় দেহে চিন্ময় রুপে জ্ঞানেন্দ্রিয়।।
কে তুমি? আমি চিনব কোন উপায়ে! তুমি—
জন্মের পূর্বে কোথায় ছিলে, জন্মের পর কোথায় এলে
মৃত্যুর পর কোথায় রবে! কে এনেছে কোন খেয়ালে;-
কোন নামে ছিলে তুমি কোন নাম নিলে
কোন নামে রবে তুমি এ ধর ত্যাগীলে?
না তুমি, বারো রবি, অর্ধ শশী, উনপঞ্চাশ বায়ুময় দেহে
বাহাত্তর হাজার নারী শ্রেষ্ঠ তিন নারীর মোহে?
তুমি কি রও? মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মনিপুর, অনাহুতে!
না- বিশুদ্ধ, আজ্ঞা-প্রজ্ঞা, সহস্রারে;- তুমিই পঞ্চ ভূতে।।
তুমি’ই কি এ জমিনে মক্কা মদিনা আরাফার ময়দান
না কি তুমিই দেবতার চরণে হয়ে,ছ পশুত্ব বলিদান!
তুমিই কী আমি! না আমার স্বত্বা?
না তুমি এ দেহ ভান্ডারের আমৃত্যু কর্তা!
কে তুমি, তুমি কে? তুমিই আছো সর্বময়ে;-
নিজেকে জানতে ভ্রমি অজ্ঞানতা রয়ে!
তুমি হে শাশ্বত, পবিত্র, নিত্য, আত্মা রুপে পরমাত্মা,
তুমিই সকল জীবে রও বা মনুষ্যের আমি চির স্বত্বা।
তুমিই রাগ, অনুরাগ, অভিমান বা ক্রোধ
অবশেষে, তুমি সব, তুমিই-আমি! নিত্য শাশ্বত প্রেম বোধ।।

Tag :

কে তুমি? বিধান কুমার বিশ্বাস

প্রকাশিত : ০৪:০২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

কে তুমি?
বিধান কুমার বিশ্বাস

কে তুমি, তুমি কে? বল হে;-
আজও পারিলাম না আমি চিনতে তোমারে!
তুমি কী খরস্রতার ন্যায় এ হিল্লোলের প্রমত্তা পদ্মা –
তুমি কী ভাগীরথী না ভৈরব স্বত্বা?
তুমি কী শদ্ব, স্পর্শ, রুপ, রস, গন্ধ
না তুমি আত্মা নিত্য ও শাশ্বত?
তুমি কি বিবেক- বুদ্ধি, রও সদা অচ্যুত
না তুমি পথভ্রষ্ট, হীনমন্যতায় বিচ্যুত!
তুমি কী নুর? না নুরজাহান!
না তুমি স্থল, ধু ধু নীল আসমান।।
তুমি কী মাখলুক না আশরাফুল মাখলুকাত;
না তুমি ছোট-বড়ো, ধনী-গরিবের দিষৎ করাঘাত!
তুমি কী শ্বাস-প্রশ্বাস না নয়নের দৃষ্টি?
না কি তুমি বাক্য, শ্রবনে অনুভূতি সৃষ্টি!
তুমি কি অনুভূতি’তে সৃষ্টিময় সুখ,
না-কি তুমি ব্যথিত হিয়ার সিন্ধু ভরা দুখ!
তুমি কি শিশু, কিশোর, যৌবন;- হও বা বৃদ্ধ,
না কি তুমি ধর বা চিত্তে’র মধ্যে আবদ্ধ ঋদ্ধ।।
তুমি কি জাগ্রত, নিত্য, শাশ্বত প্রেম?
না তুমি বিরহ, বেদনা, যন্ত্রণা’র কাছের টেম!
তুমি কি মণি, ঋষি, সুফি, দরবেশের সংরাধন
না তুমি সকল অন্যায়, অত্যাচারের সংরোধন;
তুমি কি আমার সংবৃতি না সংবিত্তি
না তুমি আমি হতে আমার সংবৃত্তি!
তুমিই বোধদয় মোর সজ্ঞান সংজ্ঞান
না তুমি পঞ্চ-ষষ্ঠ, একাদশ ইন্দ্রিয়ধারি ধর বীক্ষ্যমাণ।।
কে তুমি? তুমি কে! জীবন নামক নদীর বজরা;-
না তুমি পতিত মানবজমিনে অমূল্য আজরা!
তুমি কি জীবন রবি উদয়ের যবনিকা কাটানো কিরণ
না কি তুমি তিমিরে শশী হতে জ্যোতির নিঃসরণ?
তুমি কি সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদের হাহাকার!
না-কী তুমি, প্রসূত মা’র গর্ভ হতে সন্তানের আকার?
তুমি-ই কী পরমাত্মা? এক এবং অদ্বিতীয় –
না তুমিই এই মৃন্ময় দেহে চিন্ময় রুপে জ্ঞানেন্দ্রিয়।।
কে তুমি? আমি চিনব কোন উপায়ে! তুমি—
জন্মের পূর্বে কোথায় ছিলে, জন্মের পর কোথায় এলে
মৃত্যুর পর কোথায় রবে! কে এনেছে কোন খেয়ালে;-
কোন নামে ছিলে তুমি কোন নাম নিলে
কোন নামে রবে তুমি এ ধর ত্যাগীলে?
না তুমি, বারো রবি, অর্ধ শশী, উনপঞ্চাশ বায়ুময় দেহে
বাহাত্তর হাজার নারী শ্রেষ্ঠ তিন নারীর মোহে?
তুমি কি রও? মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মনিপুর, অনাহুতে!
না- বিশুদ্ধ, আজ্ঞা-প্রজ্ঞা, সহস্রারে;- তুমিই পঞ্চ ভূতে।।
তুমি’ই কি এ জমিনে মক্কা মদিনা আরাফার ময়দান
না কি তুমিই দেবতার চরণে হয়ে,ছ পশুত্ব বলিদান!
তুমিই কী আমি! না আমার স্বত্বা?
না তুমি এ দেহ ভান্ডারের আমৃত্যু কর্তা!
কে তুমি, তুমি কে? তুমিই আছো সর্বময়ে;-
নিজেকে জানতে ভ্রমি অজ্ঞানতা রয়ে!
তুমি হে শাশ্বত, পবিত্র, নিত্য, আত্মা রুপে পরমাত্মা,
তুমিই সকল জীবে রও বা মনুষ্যের আমি চির স্বত্বা।
তুমিই রাগ, অনুরাগ, অভিমান বা ক্রোধ
অবশেষে, তুমি সব, তুমিই-আমি! নিত্য শাশ্বত প্রেম বোধ।।