
নিরাশা
বিধান কুমার বিশ্বাস।
তুমি কেন নীলিমা সাজো ক্ষণে ক্ষণে,
মোর তটিণী-র হিল্লোল যখন বয় উজানে।
ঝর্ণার ধারা কেন তখনও ঝরে?
বর্ষণের জোয়ার যখন, তলিয়ে; মোর দেবীচর।।
ও তটিণী? দিয়ারা’র টেক কেন পুনরায় জাগে,
ছেড়ে ছিলাম যে টেক ভাঙনের আশে।
আস্তে আস্তে ভাঙিলে, আবার কেন জাগালে;
আশা যখন ফুরালো নিরাশার অন্ধকারে।।
তুমি কেন জ্যোৎস্না ফুটেছিলে আকাশে,
আমার জীবন প্রকাশ যখন গহীন তিমিরে।
তুমি কেন নক্ষত্র, জ্বালো শুধু নিশিতে;
নিশিঘোরে মোর মর্ম চাহে স্মৃতি পিষাইতে।।
তুমি কেন বর্ষণ বর্ষ বারে বারে?
পূর্বেই ভেসে গেছ,সে চর; মোর অশ্রু ঝরে।
বায়ু কেন দিচ্ছে দোলা সবুজের সমারহে,
দাউ দাউ জ্বলছে যখন হৃদয়ের দাবানলে।।
তুমি কেন রজনীগন্ধা সুভাস দাও মোরে?
সখি’র বেনি ফুলে মোড়ানো খোপায় মুখর আজো রয়ে।
তুমি কেন জোনাকি জ্বালো বারে বারে,
জাগাতে চাও? পুনরায়, বিরহ যন্ত্রণা মোর পাঁজরে।।
স্মৃতি দিবাকর, কেন এতো প্রভাকর?
হারিয়েছিলুম যা, আমি ঘোর তিমিরে।
আবার কেন আ’শে ফিরে, প্রভাতের কিরণে’তে;
হারানো সেই স্মৃতি অথৈ পাথারে।।
তুমি কেন পৃথিবী সাজো রণ সাজে?
শক্তি হারিয়েছি যখন তোমা নিরাকারে।
আবার কেন ভূকম্প কম্পে বারে বারে?
কবেই ভেঙেছে স্বপ্নময় স্মৃতির প্রাসাদ মোর অন্তরে।।
আজ কেন বিজলী চমকাও তুফানে’র তান্ডবে,
অশান্ত মন যখন শান্ত নদীর তটে।
আবার আ’শা বাধে বাসা একাকী নির্জনে,
ঝড়ের তান্ডবে দেখি, তাহাও ছিল; চুরা বালুচরে।।
আজ এ মায়াময় পৃথিবীও করে বিরুদ্ধাচারণ,
মোর মর্মের স্বপ্নগুলো জন্মাতে, ছিলো না তো; বারণ।
আজ যখন ভাঙা স্বপ্ন উড়ায়ে দিয়েছি নিরাকারে,
তবে কেন, পৃথিবী; সব ফিরাইয়া দিচ্ছ মোরে।।
আজ ভুলিতে চাই সবই ভবে’র মায়ায়,
ফিরে পেতে নাহি চাই, নিজেরও কায়।
ফিরাইয়া দিওনা মোরে,ওহে ধরণী! কর হে কবুল;
আঁকার আজ নিরাকারে বড্ডই ব্যাকুল।