
পদ্মা নদীতে অসংখ্য ডুবোচর ফেরী চলচল ব্যাহত
মোঃ ইমদাদুল হক রান
দক্ষিণাঞ্চলের ৩০ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া। প্রতিদিন এ নৌরুট দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা গুলোর কয়েক হাজার ছোট-বড় যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে এবং বের হয়ে আসে। এখন শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে পদ্মা নদীর মাঝে জেগে উঠেছে চর। ফেরিগুলো সোজা চ্যানেলে চলতে না পেরে বাড়তি অন্তত চার কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। বর্তমানে নদী পার হতে সময় লাগছে এক ঘণ্টারও বেশি।
শুক্রবার সকাল দশটা থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সরেজমিনে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া পাঁচ নম্বর ফেরি ঘাটের বিপরীতে মাঝ পদ্মায় ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে বিপরীতে মাঝপদ্মায় বিআইডব্লিটিএর দুটি ড্রেজার মেশিন অলস বসে আছে । ড্রেজার দুটি বন্ধ। ড্রেজার দিয়ে কোনো বালু অপসারণ করতে দেখা যায়নি। ডুবোচরের ফলে ফেরী ভাটি দিয়ে চলাচল করছে। এ কারণে একদিকে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে সময় অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে ফেরির তেল বেশি খরচ হচ্ছে।
ঢাকা থেকে ফেরিতে আসা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিগামী যাত্রী মনির হোসেন বলেন, ফেরিতে দাঁড়িয়ে-বসে থাকা একটি যন্ত্রণাদায়ক বিষয়। আগে এ নৌরুট পাড়ি দিতে সময় লাগত আধা ঘণ্টা, এখন এক ঘণ্টায়ও পার হতে পারছি না।
ফরিদপুরগামী যাত্রী আনোরুল ইসলাম বলেন, এ নৌপথের যাত্রীদের কথা কেউ ভাবে না। আমরা ফদিরপুরের বাসিন্দা পদ্মা সেতু দিয়েই ঢাকায় যাওয়া-আসা করি। ঢাকার সাভারে কাজ ছিল, তাই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে এসেছি। এসে মনে হয় বিপদে পড়েছি।
ফেরি খানজাহান আলীর মাস্টার শাহিন ইসলাম বলেন, ফেরি চলাচল করতে অন্তত ১৫ ফুট পানির প্রয়োজন হয়। পদ্মা নদীর মাঝে অসংখ্য ডুবোচরের কারণে ফেরি চলাচল করতে পারে না। এ কারণে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। ফলে আগে ৩০ মিনিট সময় লাগলেও এখন ৪৫ মিনিট লাগে
আমাদের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৫ মিনিটে যেতে বলা হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্ঘটনা এড়াতে আস্তে ফেরি চালাতে হচ্ছে।
ফেরি গোলাম মওলার মাস্টার আবদুল করিম বলেন, এখন সময় বেশি লাগছে। কারণ বাড়তি অন্তত ৪ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। নদীপথ ড্রেজিং করে চলাচলের উপযোগী করা প্রয়োজন।
দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের ব্যবসায়ী শাহাজান শেখ বলেন, প্রায় ২ মাস ধরে ড্রেজার মেশিন ফেলে রাখতে দেখছি। কিন্তু খনন করতে দেখি না। যেই ড্রেজার দুটি এনে রাখা হয়েছে, নিয়ম মেনে চালালে এক সপ্তাহে পুরো নদী খনন করা যায় অথচ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারনে জনগনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শীতকাল শুরু হয়েছে সন্ধা নামলে নদীতে ঘন কুয়াশা ছেয়ে যায়। ঘন কুয়াশায় শীত কালে অনেক সময় দিক হারিয়ে ফেরী চরে আটকে যায়।
কতৃপক্ষ এ বিষয়ে যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করেন এটাই জনগনের প্রত্যাশা।