
জেলা প্রতিনিধি :
রাজবাড়ী জেলায় এবার পাটের ফলন ভাল হলেও খাল-বিল ও পানির অভাবে পাট জাগ (পচানো) নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। খাল-বিলে পানি না থাকায় পাট কাটার পর অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অন্যত্র নিয়ে পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন চাষীরা। এতে কৃষকদের বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ।
এ অবস্থায় পূর্বের খাল-বিল পুনরুদ্ধার করা গেলে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে না বলে দাবি কৃষকদের। অন্যথায় প্রতিবছর তাদের পাট চাষে লোকসান গুনতে হবে।
রাজবাড়ীর ৫ উপজেলায় কম বেশি আবাদ হয়ে থাকে। দিন দিন খাল-বিল ও পুকুরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। বর্তমানে চাষীরা পাট কেটে জাগ দেওয়া ও ধোয়া শুরু করেছেন। খাল-বিল ও পুকুরের অভাবে কেউ কেউ একই খালে গাদাগাদি করে পচা ও নষ্ট পানির মধ্যেই জাগ দিচ্ছেন। ফলে পাটের রং খারাপ হচ্ছে। আবার অনেকেই উপায়ন্ত না পেয়ে পুকুরের মাছ মরে যাবার শঙ্কা নিয়েই পুকুরে জাগ দিচ্ছেন। তবে উন্মুক্ত বিলের পানিতে পাট পচাতে পাড়লে পাটের রং ভাল হয়।
এদিকে জেলায় এবার এক বিঘা জমিতে পাট আবাদে কৃষকদের সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা । আর ধারনা করছেন বিঘায় এবার ফলন হবে ৮ থেকে ১০ মন।
জেলা কৃষি সম্প্রষারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। এবং লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ফলনও ভাল হবে। এরমধ্যে সবই প্রায় তোষা জাতের পাট আবাদ হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পাট কেটে পানির অভাবে কেউ ক্ষেতে, আবার কেউ রাস্তার পাশে নিয়ে রেখেছে। আবার কেউ ভ্যান বা অন্যান্য বাহনে করে দুরে নিয়ে জাগ দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ সময় অনেকে বাধ্য হয়ে ছোট খালে গাদাগাদি করে নষ্ট পানিতেই জাগ দিয়েছেন।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার অতিরিক্ত খড়া কাটিয়ে জেলায় পাট আবাদের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এবং লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ফলনও হবে। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে কৃষকদের পাট পচাতে সমস্যা হবে না। তারপরও পাট পচানো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৎস্য বিভাগ ও পুকুর মালিকদের সাথে আলোচনা করে পাট পচানোর ব্যবস্থা করবেন।