রাজবাড়ী ১১:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদী থেকে মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার  রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে জামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির  জনসভা  গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন রাজবাড়ীতে ১ হাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী আরিফ গ্রেপ্তার অগ্নিযুগের বিপ্লবী কমরেড আশুভরদ্বাজ  লাল সালাম বালিয়াকান্দিতে ভোক্তা অধিকার অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানে ১২ হাজার টাকা জরিমানা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম গ্রেফতার রাজবাড়ীতে অগ্নিযুগের বিপ্লবী  কমরেড নেতা আশুভরদ্বাজের ৩২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত রাজবাড়ী বালিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলায় আ. লীগের ১০ নেতা কারাগারে

বাবার প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসা!! স্কুল ছুটি, তাই বাপের কষ্ট কমাইনার লাইগ‍্যা, বাবার কামে সাহায্য করি!

মো. সাজ্জাদ হোসেন
গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাপদাহে যখন সাড়া দেশ গরমে হায়হুতাশ করছে ঠিক তার একেবারেই উল্টো দৃশ্য চোখে পরে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চরকর্নেশনা এলাকায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচন্ড তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ফসলের মাঠে কাজ করছে ব‍্যাস্ত কৃষকরা। সূর্য যখন ঠিক মাথার উপরে, তাপমাত্রা কম করে হলেও ৩৮/৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস হবে। আর সেই প্রখর তাপমাত্রা সহ‍্য করে কাজ করে চলেছে কর্নেশনা চরাঞ্চলের কৃষকরা। ক্ষেত জুড়ে চোখ ঘুরালেই দেখা যায়, কেউ ক্ষেতে পানি দিতে ব‍্যস্ত, কেউ ভূট্টা ভাঙ্গতে ব‍্যাস্ত, কেউ আবার পাটের ক্ষেত নিড়ানোতে ব‍্যাস্ত, কেউবা আবার ধান ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করতে ব‍্যাস্ত। রোদ জেনো তাদের খেলার সাথী। প্রচন্ড রোদের মধ্যেই আনন্দ নিয়ে কাজ করতে দেখা যায় কৃষকদের। যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই রোদের তাপদাহ জেনো মাঠ ও ফসলকে জ্বলসে দিচ্ছে। আর এ প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে মাথায় পাহাড় সমান ঘাসের বোঝা নিয়ে এগিয়ে আসছে ক্ষেতের মেঠোপথ ধরে এক ক্ষুদে চাষী। নাম তার মো. সিরাজুল সিকদার(১২)। কথা হয় ক্ষুদে চাষী মো. সিরাজুলের সাথে। সিরাজুল জানান, সপ্তাহে স্কুল দুদিন বন্ধ থাকায় বাবার কামে সাহায্য করি। সিরাজুল স্থানীয় খালেক মৃধা পাড়ার মো. রোকন সিকদার ও মোছাঃ রেহেনা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান। সে স্থানীয় ১২ নং চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। প্রচন্ড দাপদাহে ওর বয়সের অনেক শিশু যখন বাড়িতে খেলা করছে এবং গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে, কেউ বা আবার হৈ হুল্লোড় করে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঠিক তখন সিরাজুল বাড়িতে থাকা গবাদি পশুর জন‍্য ঘাস কেটে তা মাথায় বহন করে বাড়ী ফিরছে। সিরাজুল আরও বলেন, আমি যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই বাবাকে কষ্ট করতে দেখেছি, তাই সময় পেলেই বাবার কষ্ট কমাইন‍্যার লাইগ‍্যা চরে আইস‍্যা গরুর জন‍্য ঘাস কাটি। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমরা কৃষক পরিবারের ছাউয়‍্যাল। আমার বাবা কৃষি কাজ করেই আমাদের দুই ভাই ও এক বোনকে মানুষ করছেন। প্রতিদিন বাবার কামে সহযোগিতা করতে বাড়ী থেকে প্রায় অনেক দূরে ক্ষেতে গিয়ে কাজ করি। এ কয়ডাদিন এক্কেবারে গরম থাকা স্বত্বেও বাবার সাথে কাজে যায় আবার কখনো কখনো আমার সহপাঠীদের সাথেও মাঠে গিয়ে ঘাস কাইট্টা নিয়ে আসি। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আমি অনেক খুশি।

প্রচন্ড দাপদাহ থাকা সত্বেও তার চোখ জুড়ে রয়েছে বাবার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।

Tag :

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদী থেকে মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার

বাবার প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসা!! স্কুল ছুটি, তাই বাপের কষ্ট কমাইনার লাইগ‍্যা, বাবার কামে সাহায্য করি!

প্রকাশিত : ০৩:৪৩:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০২৩

মো. সাজ্জাদ হোসেন
গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাপদাহে যখন সাড়া দেশ গরমে হায়হুতাশ করছে ঠিক তার একেবারেই উল্টো দৃশ্য চোখে পরে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চরকর্নেশনা এলাকায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচন্ড তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ফসলের মাঠে কাজ করছে ব‍্যাস্ত কৃষকরা। সূর্য যখন ঠিক মাথার উপরে, তাপমাত্রা কম করে হলেও ৩৮/৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস হবে। আর সেই প্রখর তাপমাত্রা সহ‍্য করে কাজ করে চলেছে কর্নেশনা চরাঞ্চলের কৃষকরা। ক্ষেত জুড়ে চোখ ঘুরালেই দেখা যায়, কেউ ক্ষেতে পানি দিতে ব‍্যস্ত, কেউ ভূট্টা ভাঙ্গতে ব‍্যাস্ত, কেউ আবার পাটের ক্ষেত নিড়ানোতে ব‍্যাস্ত, কেউবা আবার ধান ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করতে ব‍্যাস্ত। রোদ জেনো তাদের খেলার সাথী। প্রচন্ড রোদের মধ্যেই আনন্দ নিয়ে কাজ করতে দেখা যায় কৃষকদের। যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই রোদের তাপদাহ জেনো মাঠ ও ফসলকে জ্বলসে দিচ্ছে। আর এ প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে মাথায় পাহাড় সমান ঘাসের বোঝা নিয়ে এগিয়ে আসছে ক্ষেতের মেঠোপথ ধরে এক ক্ষুদে চাষী। নাম তার মো. সিরাজুল সিকদার(১২)। কথা হয় ক্ষুদে চাষী মো. সিরাজুলের সাথে। সিরাজুল জানান, সপ্তাহে স্কুল দুদিন বন্ধ থাকায় বাবার কামে সাহায্য করি। সিরাজুল স্থানীয় খালেক মৃধা পাড়ার মো. রোকন সিকদার ও মোছাঃ রেহেনা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান। সে স্থানীয় ১২ নং চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। প্রচন্ড দাপদাহে ওর বয়সের অনেক শিশু যখন বাড়িতে খেলা করছে এবং গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে, কেউ বা আবার হৈ হুল্লোড় করে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঠিক তখন সিরাজুল বাড়িতে থাকা গবাদি পশুর জন‍্য ঘাস কেটে তা মাথায় বহন করে বাড়ী ফিরছে। সিরাজুল আরও বলেন, আমি যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই বাবাকে কষ্ট করতে দেখেছি, তাই সময় পেলেই বাবার কষ্ট কমাইন‍্যার লাইগ‍্যা চরে আইস‍্যা গরুর জন‍্য ঘাস কাটি। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমরা কৃষক পরিবারের ছাউয়‍্যাল। আমার বাবা কৃষি কাজ করেই আমাদের দুই ভাই ও এক বোনকে মানুষ করছেন। প্রতিদিন বাবার কামে সহযোগিতা করতে বাড়ী থেকে প্রায় অনেক দূরে ক্ষেতে গিয়ে কাজ করি। এ কয়ডাদিন এক্কেবারে গরম থাকা স্বত্বেও বাবার সাথে কাজে যায় আবার কখনো কখনো আমার সহপাঠীদের সাথেও মাঠে গিয়ে ঘাস কাইট্টা নিয়ে আসি। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আমি অনেক খুশি।

প্রচন্ড দাপদাহ থাকা সত্বেও তার চোখ জুড়ে রয়েছে বাবার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।