
নিজস্ব প্রতিবেদক :
অতিথি পাখি হল এমন পাখি যারা শীতকালে তাদের বাসস্থান থেকে উড়ে ঠান্ডা অঞ্চলে এসে বসবাস করতে শুরু করে। এরা সাধারণত গরমের দিনে তাদের বাসস্থানে ফিরে যায়। আর এসব অতিথি পাখি চাই শান্ত পরিবেশ, অবাধ বিচরণের স্বচ্ছল পানি। গোয়ালন্দের মরা পদ্মায় ছিলো অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ। কিন্তু এবার এই মরা পদ্মায় অতিথি পাখিদের নিরাপদ বিচরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কচুরিপানা।
শীতকালে অতিথি পাখির বিচরণ থাকে দেখার মতো। প্রতিবছর শীতে গোয়ালন্দ উপজেলার মরাপদ্মায় অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে চোখে দেখার মতো। অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখোরিত থাকে এলাকাটি কিন্তু এসব অতিথি পাখির অবাধ বিচরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কচুরিপানা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তৎকালীন গোয়ালন্দ মহাকুমার বিহারী মারা কোল নামেখ্যাত গোয়ালন্দ মরাপদ্মায় নদীর পানির শ্রোতে কচুরিপানা এসে এলাকার পরিবেশ ও নদীর পানি নষ্ট করে। স্রোতের পানিতে ভেসে আসা কচুরিপানা পরিষ্কারের নেই কোনো উদ্যোগ। এতে অতিথি পাখির বিচরণসহ কৃষি জমি হয়ে পরেছে হুমকির মুখে। এসব কচুরিপানা অপসারণ না করতে পারলে অতিথি পাখির বিচরণ এবং কৃষি জমি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পরবে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার গোয়ালন্দ উপজেলার গোয়ালন্দ বাজার রেলস্টেশন হতে গোয়ালন্দ ঘাট রেলস্টেশনমুখী রেল লাইনের কোলঘেষে বিহারীমারা কোলখ্যাত মরাপদ্মা নদীতে দেখা যায় অনেক ধরনের অতিথি পাখি এসে কচুরিপানায় ঘেরা পদ্মার খানিকটা স্বচ্ছল পানিতে বিচরণ করছে। কচুরিপানার ঘন স্তর থাকায় যায়গার সংকুলানে অনেক পাখি ঠিকমতো বিচরণ করতে পারছে না। এসময় কিছু অতিথি পাখিকে অন্যত্র উড়ে চলে যেতে দেখা যায়। এসব অতিথি পাখিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অতিথি পাখি রয়েছে। যেমন- পাতিহাঁস, রাজহাঁস, পানকৌড়ি, বড় বক, ডাহুক।
এসব অতিথি পাখিরা প্রচন্ড শীতের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে কম উষ্ণ এলাকায় হাজার হাজার মাইল পেরিয়ে চলে আসে। এসব পাখি যতদূর থেকেই আসুক না কেনো এরা পুনরায় নিজেদের বাসস্থানে ফিরে যেতে পারে। শীতের পাখিদের মধ্যে আরও রয়েছে বালিহাঁস, গিরিয়া হাঁস, সাদা মানিকজোড়, রাঙ্গামুরি, হট্টি টি, কোড়া, বাটাং, আরও অতি পরিচিত নাম। এসব পাখিদের রক্ষার দায়িত্ব সবার। এজন্য উপজেলা প্রশাসনসহ বন-বিভাগ, সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উচিৎ গোয়ালন্দের ঐতিহ্যবাহী বিহারীমারা কোল খ্যাত মরা পদ্মার কচুরিপানা অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া। পরিবেশ আমার, পরিবেশ সবার আর এ পরিবেশ রক্ষা করার দায়িত্বও সবার।