
১৪শ ফুটের মণ্ডপে ১০ হাজার বাঁশ দিয়ে সাজছে ৪ শতাধিক প্রতিমা—
কৃষ্ণ কুমার সরকার
আলোকদিয়া গ্রামে পুকুরের জলের ওপরে ১০ হাজার বাঁশ, ৩ টন লোহা ও লক্ষাধিক মণ কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ ফুটের বিশাল মণ্ডপ। এখানে দুর্গা প্রতিমাসহ চার শতাধিক দেব দেবির প্রতিমা প্রদর্শনের সুযোগ থাকছে। মণ্ডপে প্রবেশের সময় চোখে পড়বে শিবের বিশালকৃতির মূর্তি। বিশাল আকৃতির শিব দেবতাসহ সনাতন ধর্মের কাহিনী অবলম্বনে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি দেশ ও দেশের বাহিরে থেকে আসবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বিশাল কর্মযজ্ঞের আয়োজনে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের রঙের প্রস্তুতি।
আয়োজদের দাবি, এটিই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও ভিন্নধর্মী দুর্গাপূজার আয়োজন।
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার, ব্যতিক্রমী এই পূজায় এখানে প্রথমেই সবার চোখে আটকে যাবে বিশাল আকৃতির মহাদেব বসে আছেন পুকুরের জলের ওপরে। বিশাল আকৃতির ১০ হাজার বাঁশ দিয়ে তৈরি মণ্ডপ। যা গত ৪ মাস ধরে দিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন শতাধিক শ্রমিক। মণ্ডপে প্রতিটি আলাদা আলাদা স্তরে থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য সনাতন ধর্মের বিভিন্ন কাহিনী অবলম্বনে ৪শ দেব-দেবীর প্রতীমা প্রদর্শনী। যা পূর্জার দশমী শেষেও লক্ষী পূর্জার দিন পর্যন্ত চলবে। এই আয়োজনে খুশি স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষরা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো তারা মেতে উঠবেন দুর্গাপূজার আনন্দ উল্লাসে।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন সকল ধর্মের মানুষ। সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই দুর্গাপূজার উৎসবে সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও নিরাপত্তা প্রদান করবে স্থানীয় প্রশাসন।
রাজবাড়ী জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ৪৪৬টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গতিনাশিনী-দশভূজা দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে আর বিদায়ও নেবেন ঘোটকে। মায়ের আগমনে ঘুঁচে যাবে সকলের দুঃখ, বেদনা এমনটিই কামনা করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
ভিন্নতার মধ্যে থাকবে বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া সনাতন ধর্মের ২০ মনীষীর প্রতিমা। ফুটিয়ে তোলা হবে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয়। এর মধ্যে দক্ষযজ্ঞ, সতীর দেহ ত্যাগ, সতীর দেহ থেকে ৫১টি তীর্থ ক্ষেত্র, শ্রীকৃষ্ণের কুঞ্জবন অন্যতম।
প্রতীমা তৈরির কারিগর বলেন, গত ৪ মাস ধরে আমরা এখানে কাজ করছি। মহাষষ্ঠীর দিনের আগে শেষ হবে এই কাজ। আমাদের এই আয়োজন হবে দেশসেরা।
মন্ডপে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হবে। যেখানে থাকবে মেট্রোরেল, পানির ফোয়ারা।
আলোকদিয়া দুর্গাপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ বিশ্বাস জানান, প্রতি বছর এখানে ব্যতিক্রমী আয়োজন করি। করোনার পর তিন বছর বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে পারিনি। এ বছর আবার শুরু করেছি। এখানে পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন।
রাজবাড়ীর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামে বড় পরিসরে দুর্গাপূজা হবে। সেখানে আমাদের তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পোশাক এবং সাদা পোশাকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
আলোকদিয়া গ্রামের মন্দির কমিটি ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে। তাদের আয়োজন সম্পর্কে আমরা অবগত। সনাতন ধর্মের কয়েকটি দিক সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেখান থেকে মানুষ সনাতন ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে।