রাজবাড়ী ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিলাদের মিষ্টি খেয়ে ২ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞান ১২ জন, অতঃপর.

মিলাদের মিষ্টি খেয়ে ২ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞান ১২ জন, অতঃপর.

স্টাফ রিপোর্টার
কৃষ্ণ কুমার সরকার

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে মিলাদের পর বিতরণ করা মিষ্টি খেয়ে ১২ জন জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর আটজন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এশার নামাজের পর রাত ৯টার দিকে মসজিদ থেকে এই মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত হ‌লেন- মিনার শেখ (১৯), সোহান শেখ (১৯), লিমন মণ্ডল (১৭), মিন্টু শেখ (৩৫), আরিফ শেখ (৩২), সোহান শেখ (১৭), মোজাম্মেল (৬৫), সিহাব (১৮)। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ‌র্তি র‌য়ে‌ছে
সুমন শেখ (২৭), মিশু (১৮), মোরছালিন (২৭), মাহি (১৭)। অসুস্থ সবাই বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, শবেবরাত উপলক্ষে শুক্রবার এশার নামাজের পর মসজিদে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মিষ্টির একটি প্যাকেট বিতরণ করা হয়, যেখানে ১৮-১৯টি চমচম ছিল। মিষ্টি খাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই যারা খেয়েছিলেন, তারা অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়, পরে সেখান থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিনার শেখ বলেন, ‘শবেবরাত উপলক্ষে মসজিদে মিলাদ হয়েছিল। নামাজ শেষে মসজিদের সভাপতি চমচম মিষ্টি বিতরণ করেন। মিষ্টি খাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। মসজিদের নিচে নামতে পারিনি, সেখানেই পড়ে যাই। তারপর আর কিছু মনে নেই।’

মিনা‌রের মা মেহেরুন নেছা জানান, ‘আমার ছোট ছেলে বাড়িতে এসে খবর দেয় যে ভাই মসজিদে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গিয়ে দেখি ওর জ্ঞান নেই। দ্রুত বালিয়াকান্দি হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখান থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন সে কথা বলতে পারছে, কিন্তু এখনও দাঁড়াতে পারছে না।’

মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমার তিনজন ভা‌তিজা ও মামা অসুস্থ। চারজনকেই ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। মামা সুমন শেখের অবস্থা ভালো না, এখনও জ্ঞান ফেরেনি।’

আরিফ শেখ বলেন, ‘মিষ্টি খেয়ে মসজিদের নিচে মাত্র নামলাম, সঙ্গে সঙ্গে পড়ে গেলাম। এরপর সকালে দেখি হাসপাতালে শুয়ে আছি।’

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ খাদ্যে বিষক্রিয়া (ফুড পয়জনিং) নয়। যে মিষ্টি খেয়ে সবাই অসুস্থ হয়েছে, সেটিতে কোনো রাসায়নিক পদার্থ মেশানো ছিল। যার ফলে তারা অচেতন হয়ে পড়েছে। ১২ জনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে আনা হয়েছিল, এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি ৮ জন শঙ্কামুক্ত।’

Tag :

মিলাদের মিষ্টি খেয়ে ২ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞান ১২ জন, অতঃপর.

প্রকাশিত : ০২:৩০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মিলাদের মিষ্টি খেয়ে ২ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞান ১২ জন, অতঃপর.

স্টাফ রিপোর্টার
কৃষ্ণ কুমার সরকার

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে মিলাদের পর বিতরণ করা মিষ্টি খেয়ে ১২ জন জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর আটজন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এশার নামাজের পর রাত ৯টার দিকে মসজিদ থেকে এই মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত হ‌লেন- মিনার শেখ (১৯), সোহান শেখ (১৯), লিমন মণ্ডল (১৭), মিন্টু শেখ (৩৫), আরিফ শেখ (৩২), সোহান শেখ (১৭), মোজাম্মেল (৬৫), সিহাব (১৮)। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ‌র্তি র‌য়ে‌ছে
সুমন শেখ (২৭), মিশু (১৮), মোরছালিন (২৭), মাহি (১৭)। অসুস্থ সবাই বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, শবেবরাত উপলক্ষে শুক্রবার এশার নামাজের পর মসজিদে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মিষ্টির একটি প্যাকেট বিতরণ করা হয়, যেখানে ১৮-১৯টি চমচম ছিল। মিষ্টি খাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই যারা খেয়েছিলেন, তারা অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়, পরে সেখান থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিনার শেখ বলেন, ‘শবেবরাত উপলক্ষে মসজিদে মিলাদ হয়েছিল। নামাজ শেষে মসজিদের সভাপতি চমচম মিষ্টি বিতরণ করেন। মিষ্টি খাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। মসজিদের নিচে নামতে পারিনি, সেখানেই পড়ে যাই। তারপর আর কিছু মনে নেই।’

মিনা‌রের মা মেহেরুন নেছা জানান, ‘আমার ছোট ছেলে বাড়িতে এসে খবর দেয় যে ভাই মসজিদে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গিয়ে দেখি ওর জ্ঞান নেই। দ্রুত বালিয়াকান্দি হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখান থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন সে কথা বলতে পারছে, কিন্তু এখনও দাঁড়াতে পারছে না।’

মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমার তিনজন ভা‌তিজা ও মামা অসুস্থ। চারজনকেই ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। মামা সুমন শেখের অবস্থা ভালো না, এখনও জ্ঞান ফেরেনি।’

আরিফ শেখ বলেন, ‘মিষ্টি খেয়ে মসজিদের নিচে মাত্র নামলাম, সঙ্গে সঙ্গে পড়ে গেলাম। এরপর সকালে দেখি হাসপাতালে শুয়ে আছি।’

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ খাদ্যে বিষক্রিয়া (ফুড পয়জনিং) নয়। যে মিষ্টি খেয়ে সবাই অসুস্থ হয়েছে, সেটিতে কোনো রাসায়নিক পদার্থ মেশানো ছিল। যার ফলে তারা অচেতন হয়ে পড়েছে। ১২ জনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে আনা হয়েছিল, এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি ৮ জন শঙ্কামুক্ত।’