রাজবাড়ী ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
রাজবাড়ীতে অগ্নিযুগের বিপ্লবী ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামী,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,কমরেড আশু ভরদ্বাজের ৩২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত রাজবাড়ী বালিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলায় আ. লীগের ১০ নেতা কারাগারে রাজবাড়ীতে বর্ণাঢ্য পহেলা বৈশাখ উদযাপিত। বৈশাখী মেলা ( মারিয়া শাইরি) বালিয়াকান্দিতে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ ও সার বিতরণ  রাজবাড়ীতে আ. লীগের ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে নবাবপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে পেয়াজ চাষ ও চাষিদের নিয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত।

রাজবাড়ীতে ডিবি পরিচয় ফল ব্যবসায়ী সিদ্দিককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি থানায় জিডি

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

 

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : গত ৩ দিন ধরে নিখোঁজ সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের নয়নদিয়া গ্রামের মো.ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল(৪৮)।তাকে গত মঙ্গলবার(৬ মে) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজের সামনে থেকে ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

নিখোঁজ ছিদ্দিক মিজি সোহেল সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নয়নদিয়া গ্রামের মো: হাশেম মিজির ছেলে। ছিদ্দিক মিজি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

গত বুধবার(৭ মে) তার খোঁজে বাবা হাশেম মিজি রাজবাড়ী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছেন।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, ছিদ্দিক মিজি সোহেল গত মঙ্গলবার(৬ মে) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ের পাওনা টাকা কালেকশন করতে রাজবাড়ী ফল বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। পাওনা টাকা কালেকশন করে বাড়ি ফেরার পথে রাত ১১ টার দিকে ছিদ্দিক তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কে বা কাহারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায় নি। ৩ দিন ধরে এখনো সে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে নিখোঁজ ছিদ্দিক মিজির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার পরিবারের সকলে তার সন্ধান পেতে অর্তনাদ করছে। গ্রামবাসী সকলে তাদের কে সান্ত্বনা দিছে।

ছিদ্দিক মিজির পিতা হাসেম মিজি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে আমার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয় টাকা কালেকশন করতে। রাত ১১ টার দিকে সে তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে তারে বাগমারা এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ ধরছে। এরপর থেকে আমার ছেলের ফোন বন্ধ। তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সদর থানায় নিখোঁজ জিডি করি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

ছিদ্দিক মিজির মা আয়েশা বেগম বলেন,আমার ছেলের সাথে কারো কোন শত্রুতা নাই। তার নামে কোন মামলা মোকদ্দমাও নাই। আমার ছেলে হালাল পথে ব্যবসা করে সংসার চালায়।সে তার ব্যবসার টাকা কালেকশন করতে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসে নাই। তার কাছে কালেকশনের তিন লাখ টাকা ছিলো। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তারে তুলে নিয়ে গেছে। আমার ছেলের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি আমার ছেলে কে ফেরত চাই।

ছিদ্দিক মিজির স্ত্রী রেখা বেগম বলেন, আমার স্বামীর সাথে কারো কোন ঝামেলা নাই। সে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বের হয় রাজবাড়ী ফল বাজারের উদ্দেশ্যে। রাত ৯ টার দিকেও তার সাথে আমার কথা হয়। সে বলল বাড়ি আসতেছি খাবার বারো। রাত ১১ টার দিকে তার বন্ধু সাঈদ এসে বলে আমার স্বামী কে ডিবি পুলিশ ধরছে। পরে আমরা থানায় যোগাযোগ করলে তারা অস্বীকার করে। এখন পর্যন্ত আমার স্বামী নিখোঁজ।

ছিদ্দিক মিজির বন্ধু সাঈদ বলেন, রাত ১১ টার দিকে ছিদ্দিক তার মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে কল দিয়ে বলে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় কে বা কারা আটক করেছে। এই কথা বলেই ছিদ্দিকের ফোন কেটে যায়। পরে তার নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আমি বিষয়টি ছিদ্দিকের পরিবার কে জানাই এবং তাৎক্ষণিক ভ্যান নিয়ে বাগমারা এলাকায় গিয়ে সেখানে খোঁজাখুজি করি। পরবর্তীতে তাকে সেখানে না পেলে আমরা থানায় গিয়ে খোঁজ করি এবং ডিবি অফিসে গিয়ে খোঁজ করলে তারা জানায় যে ছিদ্দিক নামের কাউকে তারা আটক করেনি। পরবর্তীতে আমরা থানায় নিখোঁজ জিডি করি।

মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. টুকু মিজি বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ছিদ্দিক মিজি খুবই ভালো লোক ছিলো। আমি যতদূর শুনেছি তার সাথে কারো শত্রুুতা নেই। আমি নিয়মিত ঐ পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির অফিসার ইনচার্জ ওসি মো: মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি।কিন্তু আমরা ছিদ্দিক মিজি নামের কাউকে আটক করিনি। এমনকি মঙ্গলবার রাতে আমরা বাগমারা এলাকায় কোন অভিযানে যায় নি।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা একটি নিখোঁজ জিডি পেয়েছি। জিডিটি সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি থানায় আমরা ম্যাসেজ করে দিয়েছি। এছাড়াও জিডির সূত্র ধরে আমরা তাকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।

 

Tag :
About Author Information

রাজবাড়ীতে অগ্নিযুগের বিপ্লবী ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামী,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,কমরেড আশু ভরদ্বাজের ৩২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

রাজবাড়ীতে ডিবি পরিচয় ফল ব্যবসায়ী সিদ্দিককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি থানায় জিডি

প্রকাশিত : ০৫:৩৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

 

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : গত ৩ দিন ধরে নিখোঁজ সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের নয়নদিয়া গ্রামের মো.ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল(৪৮)।তাকে গত মঙ্গলবার(৬ মে) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজের সামনে থেকে ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

নিখোঁজ ছিদ্দিক মিজি সোহেল সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নয়নদিয়া গ্রামের মো: হাশেম মিজির ছেলে। ছিদ্দিক মিজি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

গত বুধবার(৭ মে) তার খোঁজে বাবা হাশেম মিজি রাজবাড়ী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছেন।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, ছিদ্দিক মিজি সোহেল গত মঙ্গলবার(৬ মে) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ের পাওনা টাকা কালেকশন করতে রাজবাড়ী ফল বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। পাওনা টাকা কালেকশন করে বাড়ি ফেরার পথে রাত ১১ টার দিকে ছিদ্দিক তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কে বা কাহারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায় নি। ৩ দিন ধরে এখনো সে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে নিখোঁজ ছিদ্দিক মিজির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার পরিবারের সকলে তার সন্ধান পেতে অর্তনাদ করছে। গ্রামবাসী সকলে তাদের কে সান্ত্বনা দিছে।

ছিদ্দিক মিজির পিতা হাসেম মিজি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে আমার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয় টাকা কালেকশন করতে। রাত ১১ টার দিকে সে তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে তারে বাগমারা এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ ধরছে। এরপর থেকে আমার ছেলের ফোন বন্ধ। তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সদর থানায় নিখোঁজ জিডি করি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

ছিদ্দিক মিজির মা আয়েশা বেগম বলেন,আমার ছেলের সাথে কারো কোন শত্রুতা নাই। তার নামে কোন মামলা মোকদ্দমাও নাই। আমার ছেলে হালাল পথে ব্যবসা করে সংসার চালায়।সে তার ব্যবসার টাকা কালেকশন করতে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসে নাই। তার কাছে কালেকশনের তিন লাখ টাকা ছিলো। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তারে তুলে নিয়ে গেছে। আমার ছেলের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি আমার ছেলে কে ফেরত চাই।

ছিদ্দিক মিজির স্ত্রী রেখা বেগম বলেন, আমার স্বামীর সাথে কারো কোন ঝামেলা নাই। সে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বের হয় রাজবাড়ী ফল বাজারের উদ্দেশ্যে। রাত ৯ টার দিকেও তার সাথে আমার কথা হয়। সে বলল বাড়ি আসতেছি খাবার বারো। রাত ১১ টার দিকে তার বন্ধু সাঈদ এসে বলে আমার স্বামী কে ডিবি পুলিশ ধরছে। পরে আমরা থানায় যোগাযোগ করলে তারা অস্বীকার করে। এখন পর্যন্ত আমার স্বামী নিখোঁজ।

ছিদ্দিক মিজির বন্ধু সাঈদ বলেন, রাত ১১ টার দিকে ছিদ্দিক তার মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে কল দিয়ে বলে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় কে বা কারা আটক করেছে। এই কথা বলেই ছিদ্দিকের ফোন কেটে যায়। পরে তার নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আমি বিষয়টি ছিদ্দিকের পরিবার কে জানাই এবং তাৎক্ষণিক ভ্যান নিয়ে বাগমারা এলাকায় গিয়ে সেখানে খোঁজাখুজি করি। পরবর্তীতে তাকে সেখানে না পেলে আমরা থানায় গিয়ে খোঁজ করি এবং ডিবি অফিসে গিয়ে খোঁজ করলে তারা জানায় যে ছিদ্দিক নামের কাউকে তারা আটক করেনি। পরবর্তীতে আমরা থানায় নিখোঁজ জিডি করি।

মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. টুকু মিজি বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ছিদ্দিক মিজি খুবই ভালো লোক ছিলো। আমি যতদূর শুনেছি তার সাথে কারো শত্রুুতা নেই। আমি নিয়মিত ঐ পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির অফিসার ইনচার্জ ওসি মো: মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি।কিন্তু আমরা ছিদ্দিক মিজি নামের কাউকে আটক করিনি। এমনকি মঙ্গলবার রাতে আমরা বাগমারা এলাকায় কোন অভিযানে যায় নি।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা একটি নিখোঁজ জিডি পেয়েছি। জিডিটি সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি থানায় আমরা ম্যাসেজ করে দিয়েছি। এছাড়াও জিডির সূত্র ধরে আমরা তাকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।