রাজবাড়ী ০১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্ভোগে এলাকা বাসী নির্ধারিত সময়ে সেতুর কাজ না হওয়ায়

রিয়াদ হোসেন রুবেল বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের কালীর মোড় এলাকায় সংযোগ সড়কের পাশে একটি সেতু নির্মিত হচ্ছে। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। তবে নির্মাণের নির্ধারিত সময় পার হলেও সেতুটির কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ফলে প্রায় দুই বছর ধরে দুর্ভোগ সহ্য করে বাঁশের মাচাল দিয়ে যাতায়াত করছেন ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন মহলে একাধিকবার অবগত করার পরও এ ভোগান্তি লাঘবে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পুরোনো ঘুরঘুরিয়া, ঢোলজানি, পারুলিয়া, ভিমনগর, মহারাজপুর, আখশুকনা, সাধুখালী, পূর্ব মৌকুরি, নতুন ঘুরঘুরিয়া, অভয়নগর, বন্যতৈল, আখপোটরা ও জঙ্গল গ্রামের মানুষের চলাচল সুবিধার জন্য সড়কটিতে সেতুর কাজ শুরু হয়।তবে ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতুর কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং বিল না পাওয়ায় তাঁরা কাজ বন্ধ রেখেছেন এবং যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি।

স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জঙ্গল ইউনিয়নের কালীর মোড় এলাকার ভাটি খালের ওপর ২০২১ সালে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি বড় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।যার চুক্তিমূল্য ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ টাকা। কাজের দায়িত্ব পায় ঝিনাইদহের মদনমোহন পাড়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিটন ট্রেডার্স। মেসার্স লিটন ট্রেডার্সের পক্ষে কাজ করছেন রাজবাড়ীর ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার (রতন) চৌধুরী। সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২১ সালের ১ এপ্রিল। গত বছরের ১ অক্টোবর কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।তহবিল–সংকটের কারণে গত বছরের জুন মাসে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা হলে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। সেতুর দুই দিকে পাকা রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন। মাঝেমধ্যে রাস্তা থেকে গর্তে পড়ে আহত হন।পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় শিশুরা সরাইল নিয়ে নিচের দিক থেকে ওপরে উঠতে পারে না।

জঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কল্লোল কুমার বসু বলেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকার পরে কয়েক দিন আগে কাজ শুরু হয়েছে। আমি ফোন দিয়ে ঠিকাদারকে লেবার বেশি লাগিয়ে দ্রুত কাজ করতে বলেছি। ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা কেটে রাখার ফলে প্রতি নিয়ত দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে মানুষের। যাতায়াতের জন্য ঠিকাদার একটি কাঠের মাচাল করে দিলেও প্রায়ই কাট খুলে যায়। এই মাচালের উপর থেকে গাড়ি পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার চৌধুরী বলেন, সাত–আট মাস পেমেন্ট না পাওয়ায় কাজ বন্ধ ছিল। চার-পাঁচ দিন ধরে কাজ শুরু হয়েছে।এখন কাজ চলমান রয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী খন্দকার রাহাত ফেরদৌস বলেন, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর ফান্ড ছিল না। এ কারণে কাজ ৯ মাস বন্ধ ছিল। ইতিমধ্যে ফান্ড কিছুটা এসেছে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

Tag :

দুর্ভোগে এলাকা বাসী নির্ধারিত সময়ে সেতুর কাজ না হওয়ায়

প্রকাশিত : ০৫:০৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

রিয়াদ হোসেন রুবেল বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের কালীর মোড় এলাকায় সংযোগ সড়কের পাশে একটি সেতু নির্মিত হচ্ছে। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। তবে নির্মাণের নির্ধারিত সময় পার হলেও সেতুটির কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ফলে প্রায় দুই বছর ধরে দুর্ভোগ সহ্য করে বাঁশের মাচাল দিয়ে যাতায়াত করছেন ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন মহলে একাধিকবার অবগত করার পরও এ ভোগান্তি লাঘবে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পুরোনো ঘুরঘুরিয়া, ঢোলজানি, পারুলিয়া, ভিমনগর, মহারাজপুর, আখশুকনা, সাধুখালী, পূর্ব মৌকুরি, নতুন ঘুরঘুরিয়া, অভয়নগর, বন্যতৈল, আখপোটরা ও জঙ্গল গ্রামের মানুষের চলাচল সুবিধার জন্য সড়কটিতে সেতুর কাজ শুরু হয়।তবে ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতুর কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং বিল না পাওয়ায় তাঁরা কাজ বন্ধ রেখেছেন এবং যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি।

স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জঙ্গল ইউনিয়নের কালীর মোড় এলাকার ভাটি খালের ওপর ২০২১ সালে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি বড় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।যার চুক্তিমূল্য ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ টাকা। কাজের দায়িত্ব পায় ঝিনাইদহের মদনমোহন পাড়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিটন ট্রেডার্স। মেসার্স লিটন ট্রেডার্সের পক্ষে কাজ করছেন রাজবাড়ীর ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার (রতন) চৌধুরী। সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২১ সালের ১ এপ্রিল। গত বছরের ১ অক্টোবর কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।তহবিল–সংকটের কারণে গত বছরের জুন মাসে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা হলে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। সেতুর দুই দিকে পাকা রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন। মাঝেমধ্যে রাস্তা থেকে গর্তে পড়ে আহত হন।পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় শিশুরা সরাইল নিয়ে নিচের দিক থেকে ওপরে উঠতে পারে না।

জঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কল্লোল কুমার বসু বলেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকার পরে কয়েক দিন আগে কাজ শুরু হয়েছে। আমি ফোন দিয়ে ঠিকাদারকে লেবার বেশি লাগিয়ে দ্রুত কাজ করতে বলেছি। ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা কেটে রাখার ফলে প্রতি নিয়ত দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে মানুষের। যাতায়াতের জন্য ঠিকাদার একটি কাঠের মাচাল করে দিলেও প্রায়ই কাট খুলে যায়। এই মাচালের উপর থেকে গাড়ি পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার চৌধুরী বলেন, সাত–আট মাস পেমেন্ট না পাওয়ায় কাজ বন্ধ ছিল। চার-পাঁচ দিন ধরে কাজ শুরু হয়েছে।এখন কাজ চলমান রয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী খন্দকার রাহাত ফেরদৌস বলেন, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর ফান্ড ছিল না। এ কারণে কাজ ৯ মাস বন্ধ ছিল। ইতিমধ্যে ফান্ড কিছুটা এসেছে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।