রাজবাড়ী ০১:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে সুগন্ধি আমনের দ্বিগুণ আবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজবাড়ীতে সুগন্ধি আমন ধানের আবাদ বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। বাজারে চাহিদা আর ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন এই সুগন্ধি ধানের আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

জেলায় কালোজিরা, বাদশাভোগ, চিনি আতব, সুগন্ধি ধানের পাশাপাশি ব্রি-৩৪ ও ব্রি-৭৫ নামের নতুন সুগন্ধি জাতের আমন ধানের আবাদ বেড়েছে। ফলন বেশি আর ভালো বাজার দর হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে এ জাতের ধান।

কৃষকদের অভিযোগ, বীজ সঙ্কট এবং কৃষি বিভাগের অসহযোগিতার কারনে চাষিরা বেশি লাভের আশায় এ ধানের অবাদ করলে অনেকটা ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। কেউ কেই বলছেন, অল্প প্রাকৃতিক দূর্যোগেই এই সুগন্ধি ধানের বেশ ক্ষতি হয় বলে কৃষি বিভাগের অনিহা।

কৃষকেরা জানান, সাধারন ধানের চেয়ে সুগন্ধি চালের ধানের দাম বাজারে দ্বিগুনেরও বেশি। ভালো দামের কারণে এবার র্কষকদের মাঝে আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়া এবার ফলনও বেশ হয়েছে। ফলে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। মুখোরোচক খাবার তৈরিতে সুগন্ধি এ ধানের কোনো বিকল্প নেই।

কৃষকেরা আরো জানান, সিত্রাংয়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন ও বাজার দর বেশির সাথে রবি মৌসুমে ফসলের প্রণোদনা দেয়ায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।

কৃষিনির্ভর রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা, বালিয়াকান্দি, পাংশা, গোয়ালন্দ ও কালুখালী এ পাঁচটি উপজেলাতে ধান চাষ হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। এ বছর এ অঞ্চলগুলোতে সুগন্ধি আমন ধানের চাষ বেশি হয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গতবছরের চেয়ে এ বছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে চার হাজার ৪১১ হেক্টর সুগন্ধি ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল পাঁচ হাজার ৭৪৪ হেক্টর। চলতি বছর দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সুগন্ধি জাতের এ ধান সাধারনত অন্যান্য ধানের চেয়ে বাজার দর দ্বিগুণেরও বেশি থাকে। যার ফলে এই ধানের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারনত পোলাও, বিরিয়ানী, পায়েশ, জর্দ্দা ও বিভিন্ন ধরনের পিঠা বা মুখোরোচক খাবার তৈরিতে সুগন্ধি এ চালের কোনো বিকল্প নেই।

জানা গেছে, সুগন্ধি জাতের ধানের পাশাপাশি আমন ধানের বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদও বেশি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর দু’হাজার হেক্টর ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ হাজার হেক্টর আমন আবাদ হয়েছে। এ বছর ধানের বাজার দর ও ফলনের কারণে সিত্রাংয়ে ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে জানান চাষিরা।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণদিয়া গ্রামের সুগন্ধি ধানচাষি আবুল কালাম জানান, তিনি এ বছর এক বিঘা জমিতে সুগন্ধি জাতের কালোজিরা ও চিনি আতপ ধানের আবাদ করেছেন। সাধারণ আমন ধানের আবাদের চেয়ে খরচ কম ও দাম বেশি হওয়ায় তিনি এর আবাদ গত বছরের চেয়ে বেশি করেছেন। তার মত আরো কৃষক ওয়াজ কুরুনি, বাচ্চু তালুকদার, হোসন আলীসহ অন্য কৃষকেরা এ ধানের আবাদ করেছেন।

তারা জানান, সাধারণ আমন ধানের চেয়ে সুগন্ধি ধান ও চালের বাজার দর দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে থাকে। এ ধানের আবাদে খরচও কম, তাই লাভও হয় বেশি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: বাহাউদ্দিন শেখ বলেন, রাজবাড়ীতে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কালোজিরা, বাদশাভোগ, চিনি আতব, সুগন্ধি ধানের পাশাপাশি ব্রি-৩৪ ও ব্রি-৭৫ নামের নতুন সুগন্ধি জাতের আমন ধানের ফলন বেশি ও বাজার দর বেশি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

Tag :

রাজবাড়ীতে সুগন্ধি আমনের দ্বিগুণ আবাদ

প্রকাশিত : ০৬:১৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজবাড়ীতে সুগন্ধি আমন ধানের আবাদ বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। বাজারে চাহিদা আর ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন এই সুগন্ধি ধানের আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

জেলায় কালোজিরা, বাদশাভোগ, চিনি আতব, সুগন্ধি ধানের পাশাপাশি ব্রি-৩৪ ও ব্রি-৭৫ নামের নতুন সুগন্ধি জাতের আমন ধানের আবাদ বেড়েছে। ফলন বেশি আর ভালো বাজার দর হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে এ জাতের ধান।

কৃষকদের অভিযোগ, বীজ সঙ্কট এবং কৃষি বিভাগের অসহযোগিতার কারনে চাষিরা বেশি লাভের আশায় এ ধানের অবাদ করলে অনেকটা ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। কেউ কেই বলছেন, অল্প প্রাকৃতিক দূর্যোগেই এই সুগন্ধি ধানের বেশ ক্ষতি হয় বলে কৃষি বিভাগের অনিহা।

কৃষকেরা জানান, সাধারন ধানের চেয়ে সুগন্ধি চালের ধানের দাম বাজারে দ্বিগুনেরও বেশি। ভালো দামের কারণে এবার র্কষকদের মাঝে আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়া এবার ফলনও বেশ হয়েছে। ফলে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। মুখোরোচক খাবার তৈরিতে সুগন্ধি এ ধানের কোনো বিকল্প নেই।

কৃষকেরা আরো জানান, সিত্রাংয়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন ও বাজার দর বেশির সাথে রবি মৌসুমে ফসলের প্রণোদনা দেয়ায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।

কৃষিনির্ভর রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা, বালিয়াকান্দি, পাংশা, গোয়ালন্দ ও কালুখালী এ পাঁচটি উপজেলাতে ধান চাষ হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। এ বছর এ অঞ্চলগুলোতে সুগন্ধি আমন ধানের চাষ বেশি হয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গতবছরের চেয়ে এ বছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে চার হাজার ৪১১ হেক্টর সুগন্ধি ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল পাঁচ হাজার ৭৪৪ হেক্টর। চলতি বছর দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সুগন্ধি জাতের এ ধান সাধারনত অন্যান্য ধানের চেয়ে বাজার দর দ্বিগুণেরও বেশি থাকে। যার ফলে এই ধানের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারনত পোলাও, বিরিয়ানী, পায়েশ, জর্দ্দা ও বিভিন্ন ধরনের পিঠা বা মুখোরোচক খাবার তৈরিতে সুগন্ধি এ চালের কোনো বিকল্প নেই।

জানা গেছে, সুগন্ধি জাতের ধানের পাশাপাশি আমন ধানের বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদও বেশি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর দু’হাজার হেক্টর ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ হাজার হেক্টর আমন আবাদ হয়েছে। এ বছর ধানের বাজার দর ও ফলনের কারণে সিত্রাংয়ে ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে জানান চাষিরা।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণদিয়া গ্রামের সুগন্ধি ধানচাষি আবুল কালাম জানান, তিনি এ বছর এক বিঘা জমিতে সুগন্ধি জাতের কালোজিরা ও চিনি আতপ ধানের আবাদ করেছেন। সাধারণ আমন ধানের আবাদের চেয়ে খরচ কম ও দাম বেশি হওয়ায় তিনি এর আবাদ গত বছরের চেয়ে বেশি করেছেন। তার মত আরো কৃষক ওয়াজ কুরুনি, বাচ্চু তালুকদার, হোসন আলীসহ অন্য কৃষকেরা এ ধানের আবাদ করেছেন।

তারা জানান, সাধারণ আমন ধানের চেয়ে সুগন্ধি ধান ও চালের বাজার দর দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে থাকে। এ ধানের আবাদে খরচও কম, তাই লাভও হয় বেশি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: বাহাউদ্দিন শেখ বলেন, রাজবাড়ীতে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কালোজিরা, বাদশাভোগ, চিনি আতব, সুগন্ধি ধানের পাশাপাশি ব্রি-৩৪ ও ব্রি-৭৫ নামের নতুন সুগন্ধি জাতের আমন ধানের ফলন বেশি ও বাজার দর বেশি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।