রাজবাড়ী ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দীতে টিকটকার প্রেমিকের  সাথে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে  প্রবাসীর স্ত্রীর উধাও

বালিয়াকান্দীতে টিকটকার প্রেমিকের  সাথে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে  প্রবাসীর স্ত্রীর উধাও

রাজবাড়ী সময় :

টিকটকারের সাথে মোবাইলে পরিচয় প্রেমের সম্পর্কে জরিয়ে টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার নিয়ে টিকটকার প্রেমিকের সাথে ঘর ছেড়ে উধাও সদ্য বিবাহিত প্রবাসীর স্ত্রী।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিনবাড়ী গোয়ালপাড়া গ্রামে।

থানার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিনবাড়ী গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ শাহ আলম হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ মন্ডলের মেয়ে রিয়া মনি (১৯) এর। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী শাহ আলম হোসেন স্ত্রী রিয়া মনিকে নিজ বাড়ীতে রেখে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সম্প্রতি স্ত্রীর পরামর্শে নতুন বাড়ী করার জন্য তার নিকট ৫ লাখ টাকাও দেন শাহ আলম হোসেন। স্বামী প্রবাসে থাকায় মোবাইলে পরিচয় হয় টিকটকার ফারুকের সাথে। এই পরিচয়ের সুত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন পোষ্টে তাদের চলে প্রেমালাপ। ঠিকানা আদান প্রদান। সেই সূত্র থেকে জানা যায় প্রেমিক ফারুকের বাড়ী বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনিয়নের সিহালী গ্রামে। প্রেমিক ফারুক রিয়াকে ভাগিয়ে নিতে মুঠোফোনে বিভিন্ন প্রকার ম্যাসেজ আদান প্রদান করে।

এরই মধ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারী সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে রিয়ার মা ফরিদা বেগম (৫০) জামাই বাড়ী থেকে মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে আসে। এরপর আর বাড়ীতে ফিরে না যাওয়ায় রিয়ার বাড়ীতে খোঁজ নিলে তারা টালবাহানা পূর্ণ কথা বলে। কোন উপায় না পেয়ে শাহ আলমের বড় ভাই মোঃ মনির হোসেন বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারী মনির হোসেন বলেন, রিয়া মনি আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ফরিদা বেগম আমার ছোট ভাইয়ের শ্বাশুরি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে মা ও মেয়ে ২ জন তার বাবার বাড়ীতে যাওয়ার সময় বলে যায় বিকালে বাড়ীতে ফিরে আসবে। ঐদিনে আমার ছোট ভাই দুপুরে তার স্ত্রীকে ফোন দেয় রিয়ার ব্যবহৃত ০১৮৮০৭৭১৫৯২ নাম্বারে কিন্তু ফোনটি বন্ধ পেয়ে  তার চাচিশ্বাশুরিকে ফোনে স্ত্রীর ফোন বন্ধের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। তার চাচিশ্বাশুরি স্ত্রীর মা ফরিদা বেগমকে ডেকে দেয়। রিয়ার মা বলে সে তার বান্ধবির বাড়ীতে বেড়াতে গেছে। পরবর্তীতে ফোনে কোন খবর না পাওয়ায় ছোটভাই আমাকে ফোন দিয়ে তার শ্বশুর বাড়ী গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসতে বলে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমার মা এবং অন্য ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তাদের বাড়ীতে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে সে তার বাবার বাড়ীতে নাই। আমার মা রিয়ার মাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় রিয়া তার খালার বাড়ী ঝিনাইদাহ গেছে। তার খালার নাম্বার চাইলে তারা বলে আমাদের কাছে নাম্বার নেই। আমার মা ও অন্য ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাড়ীতে ফিরে আসে এবং সব কিছু খুলে বলে।  আমি বিষয়টি ছোট ভাইকে জানালে সে বলে বাড়ী থেকে আসার সময় নতুন বাড়ী করার জন্য নগদ ৫ লক্ষ টাকা তার কাছে রেখে আসছি। তখন আমি ও আমার বাড়ীর সবাই যাচাই করার জন্য আমার ভাইয়ের ঘরে খোঁজ করে দেখতে পাই যে আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণের একটা নেকলেস, গলার চেইন, হাতের রুলি, কানের দুল ও নাক ফুল যার আনুষ্ঠানিক মুল্য  ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রিয়ার চাচিকে ফোনে বিষয়টি জানালে তারা ১ সপ্তাহের মধ্যে মেয়ে হাজির করার কথা বলে। অথচ অদ্যাবধি তারা মেয়ের খোঁজ দিতে পারেনি। আমি কোন উপায় না দেখে বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও এর কোন অগ্রগতি হয়নি।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভিকটিম উদ্ধারের কাজ চলছে।

Tag :

বালিয়াকান্দীতে টিকটকার প্রেমিকের  সাথে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে  প্রবাসীর স্ত্রীর উধাও

প্রকাশিত : ০৪:০৪:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

বালিয়াকান্দীতে টিকটকার প্রেমিকের  সাথে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে  প্রবাসীর স্ত্রীর উধাও

রাজবাড়ী সময় :

টিকটকারের সাথে মোবাইলে পরিচয় প্রেমের সম্পর্কে জরিয়ে টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার নিয়ে টিকটকার প্রেমিকের সাথে ঘর ছেড়ে উধাও সদ্য বিবাহিত প্রবাসীর স্ত্রী।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিনবাড়ী গোয়ালপাড়া গ্রামে।

থানার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিনবাড়ী গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ শাহ আলম হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ মন্ডলের মেয়ে রিয়া মনি (১৯) এর। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী শাহ আলম হোসেন স্ত্রী রিয়া মনিকে নিজ বাড়ীতে রেখে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সম্প্রতি স্ত্রীর পরামর্শে নতুন বাড়ী করার জন্য তার নিকট ৫ লাখ টাকাও দেন শাহ আলম হোসেন। স্বামী প্রবাসে থাকায় মোবাইলে পরিচয় হয় টিকটকার ফারুকের সাথে। এই পরিচয়ের সুত্র ধরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন পোষ্টে তাদের চলে প্রেমালাপ। ঠিকানা আদান প্রদান। সেই সূত্র থেকে জানা যায় প্রেমিক ফারুকের বাড়ী বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনিয়নের সিহালী গ্রামে। প্রেমিক ফারুক রিয়াকে ভাগিয়ে নিতে মুঠোফোনে বিভিন্ন প্রকার ম্যাসেজ আদান প্রদান করে।

এরই মধ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারী সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে রিয়ার মা ফরিদা বেগম (৫০) জামাই বাড়ী থেকে মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে আসে। এরপর আর বাড়ীতে ফিরে না যাওয়ায় রিয়ার বাড়ীতে খোঁজ নিলে তারা টালবাহানা পূর্ণ কথা বলে। কোন উপায় না পেয়ে শাহ আলমের বড় ভাই মোঃ মনির হোসেন বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারী মনির হোসেন বলেন, রিয়া মনি আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ফরিদা বেগম আমার ছোট ভাইয়ের শ্বাশুরি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে মা ও মেয়ে ২ জন তার বাবার বাড়ীতে যাওয়ার সময় বলে যায় বিকালে বাড়ীতে ফিরে আসবে। ঐদিনে আমার ছোট ভাই দুপুরে তার স্ত্রীকে ফোন দেয় রিয়ার ব্যবহৃত ০১৮৮০৭৭১৫৯২ নাম্বারে কিন্তু ফোনটি বন্ধ পেয়ে  তার চাচিশ্বাশুরিকে ফোনে স্ত্রীর ফোন বন্ধের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। তার চাচিশ্বাশুরি স্ত্রীর মা ফরিদা বেগমকে ডেকে দেয়। রিয়ার মা বলে সে তার বান্ধবির বাড়ীতে বেড়াতে গেছে। পরবর্তীতে ফোনে কোন খবর না পাওয়ায় ছোটভাই আমাকে ফোন দিয়ে তার শ্বশুর বাড়ী গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসতে বলে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমার মা এবং অন্য ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তাদের বাড়ীতে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে সে তার বাবার বাড়ীতে নাই। আমার মা রিয়ার মাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় রিয়া তার খালার বাড়ী ঝিনাইদাহ গেছে। তার খালার নাম্বার চাইলে তারা বলে আমাদের কাছে নাম্বার নেই। আমার মা ও অন্য ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাড়ীতে ফিরে আসে এবং সব কিছু খুলে বলে।  আমি বিষয়টি ছোট ভাইকে জানালে সে বলে বাড়ী থেকে আসার সময় নতুন বাড়ী করার জন্য নগদ ৫ লক্ষ টাকা তার কাছে রেখে আসছি। তখন আমি ও আমার বাড়ীর সবাই যাচাই করার জন্য আমার ভাইয়ের ঘরে খোঁজ করে দেখতে পাই যে আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণের একটা নেকলেস, গলার চেইন, হাতের রুলি, কানের দুল ও নাক ফুল যার আনুষ্ঠানিক মুল্য  ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রিয়ার চাচিকে ফোনে বিষয়টি জানালে তারা ১ সপ্তাহের মধ্যে মেয়ে হাজির করার কথা বলে। অথচ অদ্যাবধি তারা মেয়ের খোঁজ দিতে পারেনি। আমি কোন উপায় না দেখে বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও এর কোন অগ্রগতি হয়নি।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভিকটিম উদ্ধারের কাজ চলছে।