
বালিয়াকান্দিতে শাশুড়ি ননদ ও দেবরের হাতুড়ি পেটায় হাসপাতালে ভর্তি তিন সন্তানের জননী।
ইমদাদুল হক রানা ঃ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূর ওপর তাঁর শাশুড়ি, ননদ ও দেবর অমানষিক শারিরিক নির্যাতন হাতুড়ীপেটা রকরেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ওই গৃহবধূ বর্তমান বালিযাকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় রাতেই নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর বড় বোন ঝর্ণা বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াকান্দি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম শেফালি বেগম (২৮)। সে বালিয়াকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া দক্ষিণবাড়ী পদমদী গ্রামের প্রবাসী আরিফ সরদারের স্ত্রী। তাঁর স্বামী ৮বছর ধরে ইরাকে রয়েছেন।
সোমবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর সাথে। তিনি জানান, তাঁর দেবর সোহেল সরদার (২৭) এলাকায় একজন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে সে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তাঁর প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় মাঝে মাঝেই তাকে শারিরিক নির্যাতন করে। এর আগে ওই গৃহবধূ সোহেলের নামে থানায় একটি অভিযোগও দেন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে নিলে সে অভিযোগ তুলে নেন। কিন্তু এরপরেও সে তাকে বিরক্ত করতে থাকে। নেশা করে এসে সে নির্যাতন চালায়। তার সৎ শাশুড়ি হালিমা বেগম (৫০) ও ননদ রুমা বেগম (২২) এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে থাকে।
রোববার মাগরিবের আযানের পর ওই গৃহবধূ তাঁর চাচার বাড়ী থেকে স্বামীর বাড়ীতে আসার সময় পথের মধ্যে তার শাশুড়ি ও ননদ তাকে গতিরোধ করে। এরপর তারা তাকে অতর্কিত ভাবে ঝাপটে ধরলে তার দেবর সোহেল তাকে ভাঙ্গা ইট ও হাতুড়ি দিয়ে বেদম পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এই হামলার শিকারে তাঁর ডান চোখ ও চোখের নিচ রক্তের জমাট বেধে গিয়েছে। আর ডান পায়ের হাটুর ওপর মারাত্বক জখম হয়েছে।
তিনি আরো জানান, শুধু তাকেই না। গত বছর তার স্বামী দেশে আসলে তার কাছে টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অপরাগতা স্বীকার করায় সোহেল তার স্বামীকেও বেধড়ক মারপিট করেছিলেন।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর বড় বোন ঝর্ণা বেগম জানান, তাঁর বোনের চিৎকার শুনে তার বড় ভাগ্নি যুথী(১৪) ছুঁেট গিয়ে দেখেন তার মা অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। পরে সে তাদের জানালে তারা শেফালিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার চোখ এবং পা মারাত্বক জখম হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে রাতেই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সোহেল সরদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।
নবাবপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বাবু জানান, সোহেল গাজা বেচাকেনার সাথে জড়িত। ও বখাটে ছেলে। গ্রামের কাউকে তোয়াক্কা করেনা। ওকে নিয়ে গ্রামে অনেক বার শালিস হয়েছে। প্রায়ই ওর ভাবিকে মারধর করে। রোববার মেরে মারাত্বক ভাবে ওর ভাবিকে আহত করেছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহৃ। তিনি থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য রাতেই তাকে পরামর্শ দিয়েছেন। এবং ন্যায়বিচার সার্থে ভুক্তভোগীর পক্ষে অবস্থান নিবেন। এছাড়া তিনি ভুক্তভোগী সুচিকিৎসার জন্য যা করার প্রয়জন তা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ওসি জামাল উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় রাতেই একটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর রাতেই পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে।