
স্টাফ রিপোর্টার
মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদ আর সবুজ রঙের সমারোহ। এ যেনো ফুল নয় একেকটি আলোর কিরণ। চারিদিকে তাদের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে। মাথা উঁচু করে সূর্যের দিকে তাকিয়ে তাই তো নিজের অবস্থানকেই জানান দিচ্ছে। বলা হচ্ছে একবর্ষী ফুলগাছ সূর্যমুখীর কথা। এই গাছের ফুল হাসি ফুটিয়েছে রাজবাড়ীর চাষীর মুখে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে পতিত জমিসহ আগে যে সব জমিতে শুধু ধান ও তামাক চাষ হতো এখন সে সব জমিতে সূর্যমুখী ফুলগাছের চাষ হচ্ছে। গত বছর পরীক্ষামূলক ভাবে ১৪ থেকে ১৫ জন কৃষক সূর্যমুখী ফুল চাষ করে সফল হন। তাদের সফলতা দেখে এ বছর শতাধিক কৃষক সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলন ঘটিয়েছেন।
এই ইউনিয়নের ডাউকী, হরিণধরা, বাবুপুর ও বাড়াইজুড়ী এলাকায় পতিত জমিসহ আগে যে সব জমিতে ধান ও তামাক চাষ হতো সে সব জমিতেই শতাধিক কৃষক এ বছর সূর্যমুখী ফুল চাষ করে।
এলাকার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এ সব জমিতে সূর্যমুখী ফুলগুলো যেন হাসি মুখে আলো ছড়াচ্ছে। হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের অপরূপ দৃশ্য ও সৌন্দর্য দেখার জন্য অনেকেই ফুল ক্ষেতে আসে। দেখার পর অনেকেই আবার আগামী বছরে সূর্যমুখী ফুল চাষ করার আগ্রহও প্রকাশ করছেন।
কৃষক রহিম মিয়া, আলম মণ্ডল ও জালাল উদ্দিন বলেন, গত বছর এলাকার কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলক ভাবে পতিত জমি ও আগে যে সব জমিতে ধান ও তামাক চাষ হতো সে সব জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তাদের সফলতা দেখে এ বছর আমরা এলাকার শতাধিক কৃষক সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছি। এতে আমরা সফল হয়েছি। সূর্যমুখী ফুল অল্প দিনের চাষ। ১১০ দিন পর ফসল ঘরে তোলা যায়। কম খরচে লাভ তিন গুণ এবং লাভজনক ফসল।
কৃষক সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস জানান, তার দেড় বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষে খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর বিক্রি করার আশা করছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
উপ- সহকারী কৃষি অফিসার নারায়ণ মণ্ডল জানান, গত বছর সূর্যমুখী চাষে পরীক্ষামূলক ভাবে চন্দনী ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষকের মধ্যে বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করি। তাদের সফলতা দেখে এ বছর এই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক কৃষক সূর্যমুখী ফুল চাষ করে সফল হয়েছে। আগামীতে আরও বেশি করে সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের আগ্রহী করার জন্য চেষ্টা করা হবে।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর শুধু রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নেই ১৫০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে।