
গোয়ালন্দে এক বছর যাবত রাস্তার কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার চরম দুর্ভোগে রয়েছে পরিবহন এবং এলাকাবাসী
রাজু আহমেদ, রাজবাড়ী
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বাজার মাল্লাপট্টি ব্রিজ হতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দৌলতদিয়া সাইনবোর্ড পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। গত দুই বছরেরও বেশী সময়ে শেষ হয়নি সড়কটির উন্নয়ন কাজ। ২০২২ সালের ৫ মার্চ রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী সড়কটির উন্নয়ন কাজের উদ্ভোদন করেন। প্রায় ৫০ ভাগ কাজ এগিয়ে যাওয়ার পর অজ্ঞাত কারনে এক বছরের বেশী সময় ধরে কাজটি ফেলে রেখেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এতে করে অসহনীয় ধুলাবালি ও ইট-পাথরের ঝাঁকুনিতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পাশ্ববর্তী গ্রামের লোকজন ও যানবাহনের চালকরা।
মাল্লা পট্টি ব্রিজ হতে দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ৬৬ মিটার। সড়কটি মহাসড়কের বিকল্প সড়ক ও প্রধান আঞ্চলিক সড়ক হওয়ায় এটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে গত এক বছরে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ অন্তত ৬টি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনই গুরুত্ব দেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১৩ কোটি ৪৮ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৮৬ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারের জন্য ফরিদপুরের ইমতিয়াজ আছিফ এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং (জাভা) নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পায়। জানা গেছে ওই প্রতিষ্ঠানটি ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ নেতার মালিকানাধীন। কাজটি শরু হওয়ার ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সড়কটি ২৪ ফুট চওড়া হওয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও স্থাপনা না ভেঙ্গে সড়কের মাঝে বিদ্যুৎতের খুটি রেখেই মাত্র ১৮ ফুট চওড়া করা হয়েছে।
কাজ বন্ধ থাকায় রুগী ও গর্ভবতী মাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়া আনা করতে চরম বিপাকে পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি আর বর্ষা মৌসুমে কাদা পানিতে স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া দুর্ভোগের কারনে যানবাহন চলাচল করতে নাপারায় শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষকে পায়ে হেঁটে দুর দুর্দান্তের পথ পাড়ি দিতে হয়। ধুলাবালিতে দুই পাশে শত শত বাড়িঘরের লোকজনকে শ্বাসকষ্ট হয়। আংশিক কাজ হওয়া সড়ক জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বড় বড় ইট ও পাথরের কারনে নষ্ট হচ্ছে হোন্ডা ও হালকা যানবাহনের যন্ত্রাংশ।
উজানচর ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রাসেল আহমাদ সহ স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, সড়কে কাজ বন্ধ থাকায় প্রায় দুই বছর ধরে আমরা অতিকষ্টে আছি। হাজার হাজার চরের মানুষ দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তার ধুলোবালির মধ্য দিয়ে চলতে চলতে মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। আমরা বিভিন্ন স্থানে বহুবার সমস্যার কথা জানিয়ে আসছি। কিন্তু তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে আমরা দ্রুতই এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কথা চিন্তা করছি।
এ বিষয় গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, সড়কটির কাজ গড়ে ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। কার্পেটিংসহ অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গত এক বছরে ৬ টি চিঠি দিয়ে তাগিদ দেয়া হয়েছে। প্রতিবারই তাঁরা দ্রুত কাজ শেষ করার কথা বলে। কিন্তু কেউ আর যোগাযোগও করে না।
এ বিষয় কথা বলতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মুঠোফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে কোন কথা বলতে চান না।